একটি তালাক ও তালাক প্রত্যাহার-এর গল্প

বিয়ের এক বছরের মাথায় তারেক ও মিতার মধ্যে ছোট একটি বিষয় নিয়ে বেধে গেলো বিশাল গণ্ডগোল। মিতা বাসা ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে গেলো । বিরোধ যখন মিটছেইনা মিতা তখন তারেক-কে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। এরপর সে তালাকের যাবতীয় আইনগত বিষয় জানার জন্য অনলাইনে একজন উকিলের খোঁজ করল। www.lawthinkers.com -নামের একটি সাইট পেলো যেখানে অনলাইনে ফ্রি-তে আইনী পরামর্শ দেয়া হয়। মিতা ল'থিংকারস-এ প্রশ্নের ফরমটি পুরন করে তালাকের বিষয়ে পরামর্শ চাইল। ল'থিংকারস-এর অভিজ্ঞ আইনজীবী মিতার প্রশ্ন পেয়েই কাবিননামা/নিকাহনামা টি মেইল করতে বললেন।

 

কাবিনামাঃ

কাবিননামা পেয়ে আইনজীবী যে পরামর্শ দিলেনঃ-মিতার কাবিননামা/নিকাহনামা-এর ১৮ নম্বর ঘরে তালাক দেবার ক্ষমতা দেয়া আছে এবং সে তারেক-কে উকিল নোটিশ পাঠানোর মাধ্যমে তালাক প্রদান করতে পারবে। এই তালাক-কে তালাক-ই-তৌফিজ বলে। তালাকের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-

১) ২ কপি ছবি

২) কাবিননামার কপি

৩) দুইজন পুরুষ সাক্ষী অথবা একজন পুরুষের পরিবর্তে দুইজন মহিলা সাক্ষী।

৪) জাতীয় পরিচয়পত্র /পাসপোর্ট এর কপি।

এরপর একজন কাজীর মাধ্যমে তালাক-এর নোটিশের একটি কপি সিটি কর্পোরেশন -এর চেয়ারম্যান বরাবর এবং আরেকটি কপি তারেক-কে সরকারী পোস্ট-অফিসের মাধ্যমে পোস্ট করে পাঠাতে হবে। চেয়ারম্যান তালাক নোটিশ পেলে এক মাস অন্তর অন্তর দুই পক্ষকে সালিশী পরিষদ গঠন করার জন্য নিজে বা প্রতিনিধি পাঠিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে উপস্থিত হতে বলে চিঠি প্রদান করবেন। সালিশী পরিষদ-এর কাজ হল স্বামী ও স্ত্রী-এর মধ্যে মীমাংসা করা। আর তিন মাসের মধ্যে আপোষ না হলে তালাক টি চেয়ারম্যানের চিঠি প্রাপ্তির তারিখ হতে ৯০ দিন পর কার্যকর হবে। তালাকটি তখন রেজিস্ট্রি করার জন্য যে কাজীর মাধ্যমে তালাকের নোটিশ পাঠানো হয়েছিল তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

মিতা ​তারেক-কে তালাক দিতে যা যা করলঃ উকিলের সাথে পরামর্শ করে কাজির মাধ্যমে একটি তালাক নোটিশ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন -এর চেয়ারম্যান বরাবর এবং উক্ত তালাকের নোটিশ এর একটি কপি তারেক-কে সরকারী পোস্ট-অফিসের মাধ্যমে পোস্ট করে পাঠিয়ে দিয়েছিল।

তালাকের নোটিশঃ

চেয়ারম্যান চিঠিটি পেয়েই দুই পক্ষকে সালিশী পরিষদ গঠন করার জন্য নিজে বা প্রতিনিধি পাঠিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে উপস্থিত হতে বলে চিঠি প্রদান করেন।

চেয়ারম্যান-এর চিঠিঃ

 

 

তারেক তালাকের নোটিশ পেয়ে মুরব্বি ও দুই পরিবারের সহায়তায় মিতার সাথে আপোষ করল। তারেক ও মিতা দুইজনই নিজেদের ভুল বুঝল এবং ডিভোর্স/তালাকের নোটিশটি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিল।

তারেক ও মিতা যেভাবে তালাকের নোটিশটি প্রত্যাহার করলঃ

তারেক ও মিতা ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান বরাবর আপোষে তালাক প্রত্যাহার করার জন্য একটি আবেদন করল। চেয়ারম্যান একটি নির্দিষ্ট তারিখে উভয়পক্ষকে নিজে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হতে বললেন। তারেক ও মিতা নিজেরাই চেয়ারম্যান এর সাথে দেখা করে পুনরায় একসাথে সংসার করার ইচ্ছা জানায়। চেয়ারম্যান উক্ত বিষয় বিবেচনা করে তাদের আবেদনপত্র গ্রহণ করেন এবং তালাক প্রত্যাহারের  আদেশ জারী করেন। কয়েকদিন পর মিতা ও তারেক উক্ত আদেশের সার্টিফাইড কপি ঢাকা নগরভবন থেকে সংগ্রহ করে নেয় এবং পুনরায় একসাথে সংসার শুরু করে। এর এক বছরের মাথায় মিতা ও তারেকের ঘর আলো করে আসে ফুটফুটে এক সন্তান।

লেখকঃ রাওমান স্মিতা
এডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
যোগাযোগঃ ০১৬৭৫৬২৩০৯৬

 

Mega World News Facebook Twitter Myspace Friendfeed Technorati del.icio.us Digg Google Yahoo Buzz StumbleUpon Eli Pets

Comments are closed.

Contact Us

Call Us0088-01755991488, 01675623096

Chambers:
*House : 21/A, Road : 16, Sector : 4 , Uttara, Dhaka-1230, Bangladesh.

*Hasna Hena Cottage, Room : 3/B (2nd Flr.), Agorbati Goli, 37/1 Court House Street, Kotwali, Dhaka, Bangladesh.

E-mail: admin@lawthinkers.com
Web: Law Thinkers

Archives